গোলমেলে কোভিড
আলাপ পরিচয়
নয় নয় করে , আর ভয় ভয় করে কাটিয়ে ফেললাম অনেকগুলো দিন , মাস । কিন্তু আর কতদিন ??? এই প্রশ্ন সবার , কিন্তু উত্তর জানা নেই কারোর। বেশ কিছু নতুন নতুন শব্দের সাথে আলাপ পরিচয় জমে উঠেছে এই কয় মাসে । স্যানিটাইজ , কোয়ারেন্টাইন , হোম আইসোলেসন , অ্যসিম্টমেটিক , লকডাউন , আনলক ওয়ান/ টু/থ্রি /ফোর , ওয়ার্ক ফ্রম হোম , অনলাইন ক্লাস, ওয়েবিনার , নিও নর্মাল ইত্যাদি ইত্যাদি। এছাড়া রয়েছে নিজেকে, পোশাক পরিচ্ছদকে , বাইরের ব্যবহার্য সামগ্রী কে , কাঁচা বাজারকে, প্যাকেটজাত দ্রব্য কে .... অর্থাৎ সব কিছুকেই আপাদমস্তক পরিস্কার করার দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে কাঁচা সব্জিকে শুধুমাত্র জল দিয়েই ভালো ভাবে পরিস্কার করা স্বাস্থ্যসম্মত। সাবান জলে খাবার সামগ্রী কখনোই পরিস্কার করা উচিত নয়। এর ফলাফল মারাত্মক । এখন কিছু না হলেও ভবিষ্যতে কি হবে বলা মুশকিল। সাবান বা ডিটারজেন্ট কোনো ভাবেই শরীরের ভিতরে যাওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
সব কিছু এখন অনেকটাই অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। শুরুর দিকের , কি যে করি ভাবটা খানিকটা হলেও বদলে গেছে। আমরা যে অভ্যাসের দাস , তা যেন আরো একবার নতুন ধারায় , নতুন ভাবে প্রমাণিত হলো ।
মাস্ক
এবার আসি মুখোস বা মাস্কের কথায়। আমাদের বর্তমান জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারি সামগ্রী। সঠিক মাস্ক কোনটা , সেটা নিয়ে একটা সংশয় আছেই। আর তার ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়েও গোলযোগের শেষ নেই।যে যেটি ব্যবহার করছেন, তার কাছে সেটাই সঠিক মাস্ক। সর্বক্ষেত্রে কিন্তু সেটা সঠিক নয়। তাহলে ??? উপায় কি ? উপায় নিশ্চয়ই আছে। সাধারণ বুদ্ধিতে একটা বিষয় সকলেই জানি, সার্জিক্যাল মাস্কের ব্যবহার হয় , যে কোনো চিকিৎসা কেন্দ্রে , বিশেষ করে অপারেশন থিয়েটারে। যেখানে নানা ধরনের সংক্রমণ রোধের প্রয়োজনেই এর ব্যবহার হয়ে আসছে দিনের পর দিন , বছরের পর বছর । এই ব্যবহার মোটেই হাল আমলের নতুন সংযোজন নয়। কাজেই এর ব্যবহার অনেকটাই নিশ্চয়তা দিতে পারে। তবুও কেন পুরোপুরি নিশ্চিত নয় ? এবার আসছি সেই কথায়। যে কোনো সার্জিক্যাল মাস্কের কার্যকারিতার একটা সময় নির্ধারিত করা আছে। তারপরে তার ব্যবহার, অব্যবহারেরই সামিল । আর এই সার্জিক্যাল মাস্ক যদি ধোয়া হয়, তাহলে তার পোরস্ গুলো সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। কাজেই নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। না হলে সেটি শুধুমাত্র ডাস্টগার্ডে পরিণত হবে। প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। নানা ধরনের মাস্কের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে নিশ্চিত হয়ে ব্যবহার করা উচিত। যেমন ভেন্ট যুক্ত মাস্ক প্রথম দিকে ব্যবহার করা হলেও, এখন তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অনেকেই N-95 মাস্ক ব্যবহার করছেন। এটির ব্যবহারের কিছু নির্দেশাবলি আছে । সেই মতনই ব্যবহার করা উচিত। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মী ,এছাড়াও প্রধাণত যারা সরাসরি এই কোভিড ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সাথে যুক্ত তাদের এই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, সাথে অন্যান্য সাজসরঞ্জাম। তবে আমরাও অতি সাবধানতা অবলম্বন করতে N-95 মাস্ক ব্যবহার করছি। সঠিক সাবধানতা সব সময়ই প্রয়োজন।
চিকিৎসা কেন্দ্রের সাবধানতা অবলম্বন যেমন জরুরি, বাইরের দুনিয়াতে অবস্থান কালে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা আরো বেশি । কেন ? কারণ বাইরের বিপদটা পুরোপুরি আমাদের অজানা। চিকিৎসা কেন্দ্রের বিপদের অস্তিত্ব আমাদের জানা বিষয়। তাই সেখানে দুপক্ষের সাবধানতা অবলম্বন, সতর্কতা অনেকটাই রক্ষাকবচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় । কিন্তু বাইরের পরিবেশ আমাদের সম্পূর্ণ অজ্ঞাত। সেখানে বিপদের আশঙ্কা থাকতেও পারে , আবার না থাকতেও পারে । কিন্তু সেটাই বেশি ভয়ের । তাই যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন অবশ্যই জরুরি।
পোশাকের সাথে ম্যাচ করে মাস্ক পরা কতোটা সঠিক, সেটাও জানা জরুরি। তেমন মনে করলে সঠিক মাস্কের ওপর ডিজাইনার মাস্ক বা ডাস্টগার্ড পরা যেতেই পারে , যদিও ব্যাপারটা বেশ কষ্টসাধ্য হবে। এছাড়া এক টানা মাস্ক পরা বেশ দমবন্ধকর। কিন্তু বিপদ বড়ই বালাই। তবে , নিঃশ্বাস গ্রহণ ও প্রশ্বাস ত্যাগের প্রয়োজনীয়তা আমাদের সকলেরই কম বেশি জানা। দুটোই সমান দরকারি । নিরুপায় হয়ে আমাদের মুখ , নাক ঢাকতে হচ্ছে। তাই মাঝেমধ্যে ঢাকা সরিয়ে, একটু স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচল করতে দেওয়াও খুব দরকারি, তবে অবশ্যই পরিবেশ, পরিস্থিতি বিচার করে।
জর্জরিত আমরা
জ্বর নিয়েও চলেছে বিস্তর চাপানউতোর । প্রথমত জ্বর হলেই যেমন সেটা কোভিড আক্রান্ত ধরে নেওয়া অযৌক্তিক , তেমনই বেঠিক "আমার জ্বর কোভিড নয়" এই ধরনের গা জোয়ারি ভাবনা। যে কোনো জ্বরের কিছু সাধারণ লক্ষণ থাকে , কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বরের ও সে সব লক্ষণ থাকে , এছাড়াও তার আরো বেশ কিছু উপসর্গ আছে। যে গুলো আমরা এখন কিছুটা জেনেছি নানা বিশ্বস্ত সূত্রে। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর সেরে যাওয়ার পরও উপসর্গ রয়ে যাচ্ছে বা নতুন করে দেখা দিচ্ছে। এখন কথা হলো এই ভয়াবহ জ্বরের গতি প্রকৃতি বোঝা সত্যিই খুব কঠিন। কাকে কাবু করবে আর কে একে হারিয়ে নিজে জিতে ফিরবে এ কেউ বলতে পারছে না। কাজেই জ্বর হলেই ঘাবড়ে গেলে চলবে না। যা যা করণীয় তা করতে হবে। করণীয় বলতেই কোভিড পরীক্ষা নয়। তবে যদি প্রয়োজন হয়, চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করতে হবে বৈকি। আবার পরীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলে , নিজের ও সঙ্গের সবার কথা ভেবে পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা আমরা নিজের পছন্দসই বিষয় শুনতে , ভাবতে ভালোবাসি। একজন ব্যক্তির পরীক্ষার ফল যদি দুই জায়গায় দুরকম আসে , আমরা তার থেকে পছন্দমত ফলাফল বেছে নিই । এক্ষেত্রে ভুল কোনটা যাচাই করা যখন মুশকিল, তখন আবারও পরীক্ষা করা যে জরুরি সেটা বুঝতে চাই না। ভুল যে হয় না , সেটা একদমই সঠিক নয় । কিন্তু ফলভোগকারি যে , তাকে তো নিজের ভালোর জন্য কিছু করতে হবেই। এরপরও যে তীরে এসে তরী ডুববে না , তাই বা কে বলবে ? এই গোলমেলে অসুখে সবকিছুই যেন হাতের বাইরে।
বার বার পরীক্ষা, স্যানিটাইজ পদ্ধতি ভালো রকম ব্যয়বহুল। সরকারি পরিষেবাতে খরচ কম , কিন্তু সেই পরিষেবা গ্রহণে আগ্রহী কজন ? নেহাৎ নিরূপায় যারা , তারা ছাড়া !!!
যে যে জ্বর আপন নিয়মে সেরে যাচ্ছে, তার সবগুলোই যে নির্দোষ সাধারণ জ্বর এমন ভাবা বোধহয় ঠিক নয়। কারণ পরীক্ষা ছাড়া কোনটা কি ধরনের জ্বর ছিল তা জানার উপায় নেই। এই ভাইরাসের প্রকার ভিন্ন ভিন্ন। কোন প্রকার কার শরীরে কি খেলা দেখাবে তা বলা বা বোঝা মুশকিল। কাজেই কেউ কেউ সম্পূর্ণ সুস্থ হলেই যদি ভাবতে থাকে , ওটা কোভিড ছিলোই না, ভাইরাল জ্বর .... সেই ভাবনায় কিন্তু কিছু ভয় , কিছু সংশয় থেকেই যাচ্ছে । কি করে ? তার আশপাশে যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে যদি সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়ে বসে ? এক্ষেত্রে করণীয় বিষয় একটাই যদি জ্বর খারাপ দিকে না গিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে রোগী , যার কোনো রকম উপসর্গও নেই , কাজেই প্রশ্ন ওঠেনি পরীক্ষা করার , সে যেন অবশ্যই আশেপাশের সবার কথা ভেবে নিজেকে কদিন একটু আলাদা রাখে । এই অতিমারির পরিবেশে না পারা কতকিছুই তো করলাম, শিখলাম .... নিজের আপনজনের জন্য , পড়সিদের ভালোর জন্য এটুকু কি করতে পারবো না ??? হয়তো তার সাধারণ ভাইরাল ফিভারই হয়েছিল ।কিন্তু কথায় বলে সাবধানের মার নেই। কাজে কাজেই।
সাবধানতা আরো
এই বিপদ কাটিয়ে যারা আবারও আমাদের মধ্যে ফিরেছেন , তাদের জবানিতে জেনেছি , ফেরার পরবর্তীকালের সাবধানতার কড়াকড়ি। কারণ শরীরের ভেতরে এই ভাইরাস যে ভয়াবহ পরিমান ক্ষয়ক্ষতি করে দেয়, তার থেকে আগের অবস্থায় ফিরতে সময় লাগে অনেক , চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হয়। নিজের কাছের মানুষ জনের কষ্টকে দীর্ঘায়িত করার থেকে , নিয়ম মেনে চলাই বাঞ্ছনীয়।
আক্রান্ত ব্যক্তি যারা চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি হচ্ছেন, ট্রিটমেন্টের পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর, প্রথমবার জ্বর হওয়ার ৪২ দিনের মধ্যে পুনরায় পরীক্ষা করলে আবারও পজিটিভ রিপোর্ট আসতেই পারে। যদিও তখন ভাইরাস তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। সব সময় এই রিপোর্ট যে পজিটিভ আসবে ,এমনও নয়, তবে বাড়ি ফেরার পর অথবা যারা বাড়িতে থেকেই সুস্থ হলেন সাবধানতার মাত্রা বেড়ে যাবে আরো অনেক বেশি । এই ভাইরাস ভয়ঙ্কর রকমের গোলমেলে ।ওই কারণেই সমস্ত পৃথিবী আজ দিশাহারা।
নিয়ম মেনে সাবধানে চলার সঙ্গে সঙ্গে, পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি আর অতি অবশ্যই রুটিনমাফিক যোগব্যায়াম করতে হবে। ইমিউনিটি বর্ধনকারী হোমিওপ্যাথি অথবা এলোপ্যাথি ওষুধ যদি খেতে হয় অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে তা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয় ।
বিচার বিশ্লেষণ
একটা কথা খুব শুনছি .... এ বড়লোকদের অসুখ। যারা বস্তিবাসী তাদের হবেই না । কথাটা আংশিক সত্য, কিন্তু পুরোপুরি নয়। একটু তলিয়ে ভাবলেই গলদ কোথায় বুঝতে অসুবিধা নেই। আমরা অনেকেই অতি সাবধানী , তার থেকেও আরো এগিয়ে সাবধানী নিজের প্রিয় জনের প্রতি , সন্তানের প্রতি। সব সময় পক্ষী মাতার মতন আগলে চলেছি । ফল অতি বিষম । অল্পেই আমরা কাতর। সহ্য ক্ষমতা কমতে কমতে , কোথায় যে তা নেমেছে !! তা নিজেরাও জানি না । পক্ষীমাতাও এক সময় তার সন্তানদের খোলা আকাশে উড়তে শিখিয়ে , ছেড়ে দেয়। আমরা অনেকেই পারি না ছাড়তে। এর ফলে শারীরিক , মানসিক সব রকমের সহ্য ক্ষমতায় আমাদের পিছিয়ে পড়তে হয়। রোগ বাসা বাঁধে সহজেই। কোন কিছুতেই লড়াই করার আগেই হেরে যাই। কিন্তু যারা জন্ম থেকেই প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ছে, তাদের শারীরিক ও মানসিক সহ্য ক্ষমতা অনেক বেশি। আর সেখানেই এই মারণ ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হলেও, তারা অনেকেই অ্যসিম্টমেটিক হয়ে , নিজের অজান্তেই সংক্রমণ ঘটিয়ে চলেছে। এক সময় স্বাভাবিক নিয়মে ভাইরাসও নিষ্ক্রিয় হয়ে তার সব রকম কার্যকারিতা হারাচ্ছে। ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু ততদিনে আরো অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে। তাদের কেউ কেউ হয়তো অ্যসিম্টমেটিক রয়েছে, আবার কেউ বা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই পরিস্থিতির পুরোপুরি উপশম করা বোধহয় সম্ভব নয়। কিছু বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে যেমনটা চিরদিন হয়ে এসেছে, তার খোলনলচে বদলানো যায় না , তবে মাঝামাঝি কোন একটা পন্থা অবলম্বনের চেষ্টা হয়তো করা যায়। বাকিটা সময় আর ভাগ্য। এখন মনে হতে পারে সবই যদি ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাহলে এতো মত , পথের দরকার কি? যেমন চলেছে চলতে দিলেই তো হয় !!! কিন্তু তা যে সঠিক ভাবনা নয় , আমাদের তা জানা।
এরপর আরো রয়েছে নানা ধরনের গুজবের ছড়িয়ে পড়া। যা এই ভাইরাসের মতনই সংক্রামক। অতিরিক্ত গরমে এই ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হবে.....এই প্রথম গুজব যে সর্বৈব ভুল ছিল , তা জেনেছি যথা সময়ে। ফ্রিজ নাকি এই ভাইরাসের আঁতুড়ঘর .... সে ভাবনাও সঠিক নয়। ভাইরাসের বাতাসে ভেসে বেড়ানো নিয়েও রয়েছে নানা মুনির নানা মত । এছাড়া রয়েছে বাজারে ভ্যাকসিন আসা নিয়ে নানারকম প্রচার। যে কোনো নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও নানা ধাপ পেরিয়ে তা বাজারে আসার প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘমেয়াদি। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাকে এগিয়ে আনা কি আদেও সম্ভব ?
শেষ নয়
এখানে একটা কথাই বলার , যে , এই জগতে কিছু নিত্য ঘটনা ছাড়া সব কিছুই অনিশ্চিত, তা জানা সত্ত্বেও এতো কিছুর আয়োজন তো আবহমান কাল থেকে চলে আসছেই। কোন কিছুর জন্যই জীবন থামে না, জগত থামে না । এগিয়ে যেতেই হয়। একদিন সব শেষ হবে জানি সবাই .... কিন্তু তা বলে শুরুর কথা ভাববো না তা কি হয় ??
No comments:
Post a Comment