Tuesday, 1 October 2019

বেড়াতে গিয়ে মজারু (২)

বেড়াতে গিয়ে মজার ও স্মরনীয় ঘটনা নিয়ে সেদিন লেখার কথা মনে হলো। অল্প দুটো ঘটনা দিয়ে লেখার শুরুটা করেই দিলাম ।সত্যি ই কতো যে এমন ঘটনা জমা হয়েছে এ যাবৎ !!! ভেবে ই বেশ ভালো লাগে। মনে হয় অভিজ্ঞতা যখন বাড়ছে ... তার মানে বয়স ও উর্ধ্বমুখী । সেই ভাবনা টা ভালো ও খারাপ দুরকম অনুভূতির জন্ম দেয়।
যাক্ সে কথা ... আগের কথায় ফিরি .... প্রথম ভাইজাগ গিয়েছিলাম বিয়ের মাস আটেক পর। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাওড়া থেকে যেদিন দুপুরে র‌ওনা দিল , পরের দিন ভোরে ভাইজাগ পৌঁছনোর কথা। তখনো আমার বেড়ানো বিশেষ করে ট্রেন ভ্রমণ নিয়ে ভীতি পুরোপুরি কাটেনি। একটা ভয়.... যদি জঙ্গি ট্রেন উড়িয়ে দেয় !!!! তো এ হেন ভয় মনে নিয়েই চলেছি। স্লীপারের টিকিট। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে middle bunk এ শুয়ে লম্বা ঘুম দিয়েছি ... আমার ট্রেনের দুলুনি তে ঘুমের কোনো সমস্যা নেই। জানলার দিকে পা করে শুয়েছি। মাঝে রাতে ঘুমের দফা রফা ... হঠাৎ পায়ের পাতা ধরে হাল্কা টান !!! ধড়মড়িয়ে উঠে ধাতস্থ হয়ে কি দেখলাম জানো ? পা ধরে যিনি টান দিয়েছেন, স্বয়ং তিনি দন্তবিকশিত করে জানলা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন !! ঠিক ই ধরেছ ... রাত তখন ২ টো , অজানা স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানোর সাথে সাথেই মুক্ত বায়ু সেবন করতে আমার সাথি প্ল্যাটফর্মে নেমেছিল ... তারপরের ঘটনা জলের মতো পরিষ্কার । এই ভাবে স্টেশনে নামার অভ্যাস আগের মতই আছে , এখন কন্যা-ও সঙ্গ দেয়। কি কাণ্ড বলো দেখি !!!
সেবার আরাকুভ্যালী তে  বোরাকেভ্স আমার দেখা হয়নি.... ।পাহাড়ি পথে ‌motion sickness খুব ই common ঘটনা। গুহার বাইরে জলের বোতল আর বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে আমার দিকে করুণ চোখে চেয়ে প্রমাদ গুনতে হয়েছে আমার সাথিকে। ফেরার পথে coffee plantation দেখিয়ে আমাদের বাস নিয়ে এলো টাইডা অরণ্য ভূমিতে। সেখানে বিকেলের চা ও জলখাবার খেয়ে আবার হোটেলে ফেরার কথা। তখন আমার শরীর একটু ভালোর দিকে , অল্প কিছু খাবার খাব বলে সবে খাবারের প্লেট নিয়ে বসার জায়গায় বসতে না বসতেই আমার হাতের প্লেটের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেল... কিছু বোঝার আগেই একটা হৈচৈ শুনলাম ... হতবাক আমি অনুধাবন করলাম ... একটা গোদা বাঁদর গাছের ডাল বেয়ে ঝুলতে ঝুলতে এসে আমার প্লেট নিয়ে অন্য গাছের ডাল ধরে চম্পট দিয়েছে। বিপদ মুক্ত হয়ে তখন মজা ই লাগল। সে যাত্রায় হোটেলে ফিরে ই খাবার খেলাম।
@ শুচিস্মিতা ভদ্র

No comments:

Post a Comment