বয়সের সাথে সাথে শরীরের গতি প্রকৃতির অদল বদল হতেই থাকে। নতুন কিছু নয় বটে , তবে যখন যার হয় তার কাছে ভয়ানক রকম নতুন 🤫। কল কব্জা বিকল না হলেও গড়বড় করছে বিস্তর। বিস্তারিত সার্ভিসিং জরুরি হয়ে পড়ছে।
কিছু বছর ধরেই এমন নব নব উৎপাতে এক একবার চিতপাত হচ্ছি , আবার খানিক মন থেকে মেনে নিয়ে তা সারাই এর দিকে মনোনিবেশ করছি।
হালে মাস দুয়েক ধরে চোখ নিয়ে আতান্তরে পড়েছি। চোখে জল , চোখে বেদনা আর এমনিতেই অনেক কিছু চোখে পড়ে না তা ওমনিতেও সামিল হয়ে ঝাপসা পানা দেখে ভয়ানক গোলমাল করে ফেলেছিলাম ক্রমাগত ... একদিন মেয়েকে নিয়ে বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে তিন তিনবার তিনজনকে চেনা ভেবে হাসি বিনিময় করার পর মেয়ে শুধরে দিলে ... বললে ... কাকে শুক্লা মাসি বলছ ??? ... আবার কাকে দেখে চিনতে পারছ ভাবছ ??? এ তো অচেনা !!!!
এ দিকে ফোনে মন আর ল্যাপটপ ল্যাপে না হোক প্রায় প্রায় ল্যাপে নিয়ে ঘোরাঘুরি বিস্তর বেড়েছে !!! অগত্যা অগস্ত যাত্রার বদলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের দুয়ারে হাজির হলাম । তিনি পুরাতন প্রেসক্রিপসন দেখে আর এখনকার চোখের ছানবিন করে দেখলেন। বললেন ... 2017তে চোখের প্রেসার বাড়ার দরুণ যে আইড্রপ দিয়েছিলেন তার নিত্য ব্যবহারে উর্ধগামী চোখের প্রেসার এখন ঠিক জায়গায় ঘাটি গেড়েছে ( যদিও শারীরিক উচ্চরক্তচাপ উর্ধ্বগামী থাকে সময়ে সময়ে) । আমি বরাবর কথা মেনে চলার দলে ( বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই , সব নয়কো 🤫)
প্রেসার যদি ঠিকঠাক তাহলে এমন ধারার কারণ ??? আরো শুভদৃষ্টি যুক্ত পরীক্ষার পর চিকিৎসক জানালেন , চোখের পাওয়ার বৃদ্ধি প্রাপ্ত আর সাথে ল্যাপটপ জনিত কাজের বাড় বৃদ্ধি এর মূল কারণ !!! বুঝলাম বয়সের বৃদ্ধির হাতযশ আছে , কারণ বিগত 2016 তে ল্যাপটপ জনিত কাজ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হলেও চক্ষু তখন বয়সের গোলোযোগ ঘটার সীমান্ত অতিক্রম করে নাই।
তবুও 2017 সালের গ্লকোমা যে আর বাড়াবাড়ি করেনি ... তা ভেবে ভারি ফুর্তি হল।
চিকিৎসক আরো সাবধানী হয়ে আই ফিল্ড টেস্ট করতে দিলেন। এ পরীক্ষা 2017তে হয়েছিল ।
পরীক্ষিত হতে গেলাম যথাস্থানে। একচোখে ঠুলি পরিয়ে একখান মেশিনে মাথা ঢুকিয়ে ঠুলিহীন চোখে আলোর জ্বলে ওঠা ( এদিক ওদিক থেকে আসা আলোর বিন্দু) মেশিনের মাঝে ঠুলি বিহীন চক্ষু স্থির রেখে দেখে মেশিনের সাথে তার ( wire) সহযোগে যুক্ত বটন প্রেস করে জানাতে হবে। এ ভাবেই এক এক চোখে পরীক্ষা হবে মিনিট ১০ করে মোট ২০ মিনিট। বটন টেপার সাথে সাথেই শব্দ হবে । এক চোখে ঠুলি পরে এই সব টেপাটেপি করতে করতে মাঝে ঘুম হাজির !!! টেকনিশিয়ানের ডাকে জাগরিত হয়ে আবার আলোর উপস্থিতি গোনাগুনি শুরু করলাম । এক সময় মনে হচ্ছিল অনন্ত কাল যেন বসেই আছি আর গুনে ই চলেছি !!
এক সময় শেষ হল পরীক্ষার পালা। পরে জানলাম রিপোর্টে খানেক চিকিৎসকের কথার রিপিট টেলিকাস্ট হয়েছে।
রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনি চশমার কাঁচে ব্লু ফিল্টার লাগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। সাথে দিলেন গুটি কতক চোখ সংক্রান্ত নিদান । চোখের শুকিয়ে যাওয়া কমার ড্রপ বদল হল। চোখ blink করে নাকি তার যোগ ব্যায়াম করা জরুরি , সাথে ফোন আর ল্যাপটপের ব্যবহার কমানোর নির্দেশ। তা কতকটা সম্ভব কেউ কি জানো ????
নতুন রূপের চশমা হাজির ... বাকি নিদান ও বিধান মানার চেষ্টা চালিয়ে যেতে ই হবে !!! এই যা !!!!
একে তো চোখ দুখান ছোট্ট, তাতে গোলুমলু হয়ে তা দেখা যায় না !! হাসলেন তো বুজেই গেলেন !!! তাতে যদি দেখার সমস্যা যুক্ত হয় , তাহলে সে দুঃখ রাখব কোথায় ??? গল্পের বই পড়া ছাড়া তো বেঁচে বর্তে থাকা খুবই চাপের !!! চাপজনক বটে !!!
No comments:
Post a Comment