বেড়াতেগিয়েমজারু ৩৬
গুলমার্গ থেকে বেরিয়ে পড়লাম শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে , পেটে তখন সবারই বিধংসী ক্ষিদে। বিশেষ করে আমার তখন আকাশ খাই , পাতাল খাই অবস্থান কারণ সকালের শারীরিক গোলমাল ধামাচাপা দিয়েছিলাম দেবাশ্রিতার বানানো চিড়ে সেদ্ধ আর ইলেকট্রল সহযোগে । সে সব পেটের এক কোণায় থাকতে থাকতে হজম হয়ে মিলিয়ে গেছে বটে। আসার পথে নজর করে রাখা একখান হোটেলে আমাদের টিম ১১ ঝাঁপিয়ে পড়ল ... শরীর তখন বেশ গোলমালের মধ্যে থাকলে কি হবে ? হোটেলের বিপরীতে অবস্থিত পশরা সাজানো এম্পোরিয়াম মহিলাদের শরীরে গতির সঞ্চার করল। অপর দিকের ভদ্র মহোদয় গণ যেন কেমন মিইয়ে গেল আরো 🤔 । ঝটপট পাতিলেবু আর এক চামচে ডাল সহযোগে অল্প ভাত চটকে চটপট পেটে চালান করলাম, সাথের বাকিরাও হাল্কা কিছুতে পেট ভরালো ... কেনাকিনির আগাম ভয় ব্যকুলতায় নাকি (?) একসময় নজর করে দেখলাম তিনি হাল্কা ঘামতেছেন । গুরুত্ব না দিলেও পরে বুঝেছিলাম যে তেনার শারীরিক গোলযোগের সূত্রপাতের নোটিফিকেশন তখন আসতে শুরু করেছিল। তিনি এসব ব্যাপারে ভয়ানক চাপা , মাপা কথা বলার দরুণ শ্রীনগর পৌঁছনোর পর বুঝলাম যে শরীর গতিক গণ্ডোলার থেকে ল্যান্ড করার পর থেকেই বিরক্তির ঝাঁপ খুলেছিল ।
খাওয়ার পর সকল মহিলা কূল নিজেদের এম্পোরিয়ামে মেলে ধরলাম । লাগামধারী কর্তামশাই এর জন্য অল্প দেখে আর একখান ব্যাগ ব্যাগস্থ করে ওখানকার তল্পি গোটালাম। চক্ষু মুদিয়া বাসে আসন গ্রহণ করে এবার শ্রীনগর পানে ধেয়ে চললাম। এম্পোরিয়ামজাত উৎসাহে তখন ভাঁটার টান ।
শ্রীনগরের বুলেভার্ড রোডে , সেই স্বপ্নের ডাল লেকের ঘাট নম্বর ৬এর বিপরীতে অবস্থিত জম্মু কাশ্মীর টুরিসমের হোটেল হিমলে আণ্ডা বাচ্চা ও বাক্স প্যাটরাসহ ল্যান্ড করলাম। এরপরে ঘরে ঢুকেই কর্তা গিন্নি দুজনেই খাটিয়া পাকড়াও করলাম। কন্যা মনে খুশি আর মুখে দুঃখ নিয়ে পাশের ঘরে বন্ধুর সাথে যুক্ত হল । কন্যা মুক্ত আমরা অঘোরে ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম ... ঘুম ভাঙল রাত আটটা নাগাদ ডোরবেলের শব্দে । পাশের ঘরের জনতা আমার পুঁটি কে নিয়ে তখন হোটেলের বাইরে চলেছে খ্যাটনে ... আমরা যাওয়ার অবস্থান রহিত জেনে ওরা এগিয়ে পড়তেই ... পত্রপাট আবার আমরা বিছানা আকড়ালাম....কর্তামশাই এর তখন হি হি করে কাঁপুনির সাথে জ্বর হাজিরা দিচ্ছে ... স্বগোতক্তি শুনলাম .... "শরীর আগে । কাল বেরবো না ।" খাঁটি কথা । তবে আমি ছিলাম স্বভাব বিরুদ্ধ রকম আশাবাদী । দেবাশ্রিতা ফিরে এসে মেয়ে সহ এক গামলা চিড়ে সেদ্ধ ডিনার দিয়ে শুভ রাত্রি জানিয়ে বিদায় নিল , তখনই শুনলাম ওদিককার ঘরে আমার দিদির শরীরে ও বিপদ সংকেত ধ্বনিত !!!! বোঝো কাণ্ড !!!!
আমি চিরকালের পেট রোগা , তাই চিড়ে সেদ্ধ খাওয়ার সাথে আমার হরিহর আত্মার সম্পর্ক, কিন্তু তেনার তো চিড়ে সেদ্ধ দেখেই আত্মারাম আঁতকে উঠল .... বাবা বাছা করে খাওয়া পাট চুকলো , নড়বড় করতে করতে তিনি গড়বড়ে শরীর সারাতে ওষুধের প্যাটরা খুলে , ছড়িয়ে খান কতক ওষুধ গলধঃকরণ করে ঘুমাতে গেলেন .... আমিও অনুগামিনী হয়ে শুয়ে পড়লাম ... জ্বর তখন উত্তাপ বাড়াচ্ছে.... এদিকে আমাকে ঘামিয়ে দিচ্ছে চিন্তায় । এ জাতীয় বিষয়ে বেশি চিন্তা আমার আবার সহ্য হয় না !!! অগত্যা ঘুম দিয়ে নিষ্কৃতি পেলাম। সব রাতের শেষ আছে .... ভোরের দোর খুলল , বাবা ও কন্যা তখন ঘুমের ঘোরে , আমি উঠে খুচরো কাজে হাত লাগালাম । মনে আশা নিরাশার দোলচাল .... হেনকালে জাগন্ত হয়ে তিনি ঘোষণা করলেন .... " যেতে পারি , কিন্তু শঙ্করাচার্য মন্দিরের চড়াই চড়তে জোর করা চলবে না । " সম্মতি দিলাম ইতিবাচক দিকেই ... কিন্তু আবার এক আপদের উৎপাত চিতপাত করার তোড়জোড়ে এগিয়ে এল .... তেনার জ্বর গন ( gone ) হলে কি হবে , এবার শুরু হল পৈটিক গুলু গুলু 🤫😔😭 কোন দিকে যে কি সামলাবো ভেবেই খেই পাচ্ছিলাম না । কিন্তু খেই তো পেতেই হবে ভূস্বর্গ বলে কথা !!! অতএব চালাও চিড়ে (সেদ্ধ)ঢালাও । ছোটগিন্নি জানালে কলকাত্তাইয়া চিড়ে টিম টিম করছে । টিম ১১ তো টিমটিমে নয় আর সকাল বিকেল চিড়েতে ভিড়ে গেলে (সবাই নয় যদিও) তা তো ফুরুৎ হবেই। কর্তামশাই তখন খানিক কাঁপুনি মুক্ত.... অভয় দান করলেন সন্ধ্যাবেলায় চিড়ে মার্কেটিং এর ব্যপারে। প্রতিবার চিড়ে , মুড়ি আমাদের সাথে সাথে ঘুরে আবার ফেরত আসে কলকাতায় । এক দুবার বেড়ুর সময় আমার গেঁড়ির কাজে লাগলেও , এমন ভাবে ধাড়ি আর ধেড়ে দের ধরে ফেলেনি । এবার চিড়ে চড় চড় করে নিজের ডিমান্ড বাড়িয়ে , হারানো সম্মান ফিরে পেল ।
সেদিন মন্দির দর্শন করার পর বাগানে আগুয়ান হওয়ার কথা .... আসার আগে ছোটগিন্নি পোষাকের রঙ মিলন্তির প্ল্যানিং করে রেখেছিল। সকলে এক রঙে নিজেদের রাঙিয়ে বাগানে প্রবেশের আইডিয়া জম্পেশ হলে হবে কি ? সে রঙের বায়না মেটাতে আমার কর্তামশাই এর মুখে নানা রঙের খেলা শুরু হল ... গড়িহাটের এক দোকানের সামনে সেই রঙীন মুখ দেখে আমার রঙ উড়ে যাওয়ার উপক্রম !!! শেষমেশ নিদান দিল ছোটগিন্নি .... অন্ততপক্ষে এক এক পরিবার একই রঙে রাঙিয়ে নিও (পোশাক পোরো )। খরচের আপদ বালাই দূর হতেই তিনি ফুরফুরে মেজাজে আমাদের আর দিদিদের জন্য সাদা রঙ বাছাই করলেন .... বলতে নেই টিউলিপের রঙ বেরঙের নজরকাড়া বাগানে আমাদের সফেদ ( হাতি আমরা দুজনা বটে ) আর পিচ রঙা থিম হিট করে গেল ... ছবি তার প্রমাণ।
যাক যে যার থিমের পোষাক পর চিড়ে ( আমরা আর দিদি-জামাই বাবু )খেয়ে আর এক বোতল ইলেকট্রল নিয়ে টিম ১১ মন্দির দর্শনে বেরিয়ে পড়লাম কপাল ঠুকে। টেম্পো ট্রাভেলার পাহাড়ী পথে খানিক এগিয়ে নামিয়ে দিলো , এরপরে যাত্রা অটুট রাখলো অটো তারপরে চেকিং বিরতি মিটিয়ে হন্টনের জন্য অসংখ্য সিঁড়ি দৃশ্যমান হল , কোমরের ব্যাথার দরুণ স্বপ্না কাকিমা মন্দিরের সিঁড়ির পথ ধরলেন না , রইলেন নীচে আমাদের ফেরার অপেক্ষায় । এ দিকে চিড়ে আর ইলেকট্রল সমৃদ্ধ আমার কর্তামশাই কে উৎসাহিত করার রেডিও তো অন্ করাই ছিল ... তিনি পিছু পিছু জিরিয়ে জিরিয়ে আগু পিছু করে এগিয়ে পড়লেন । এক যাত্রায় পৃথক ফল যখন আর পৃথক না রয়ে একে পর্যবসিত হল আমিও জোরালো পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে লাগলাম ... আরেক কাকিমা ( দেবাশ্রিতার শ্বাশুড়ি মা) একবার বলেই ফেললেন ... ওমন করে ছুটে ছুটে উঠে , বলি হবেটা কি ?" ও যে আমার এক আনন্দের বহিঃপ্রকাশ তা আর বলি কেমনে ??
অবশেষে মন্দিরের চত্বরে প্রবেশ করে সবাই সামনের বাঁধাই করা গাছের ঘেরাটোপের ওপর ধপাশ হয়ে দম নিলাম। দিদিরা সবার আগে পৌঁছে তখন দম পর্ব মিটিয়ে উঠে মূল মন্দিরের সিঁড়ির পাণে চেয়ে ভয়ানক উত্তেজিত হয়ে ব্যক্ত করল ... " আরে ?? এই সিঁড়িতেই তো রাজেশ খান্না আর মুমতাজ এর লিপে সেই বিখ্যাত গানের কিছুটার দৃশ্যায়ন হয়েছে !!!! " জয় জয় শিব শঙ্কর " এ বারে উত্তেজনার পারা ঘুরে গেল অনিন্দ্য ওরফে ছোটকর্তার দিকে ... তৎক্ষণাৎ youtube থেকে গান বেরিয়ে পড়ল । এই বার দলের নায়ক ও নায়িকাগণ বয়স নির্বিশেষে সিঁড়িতে ছবি তোলার জন্য ভিড়তে উদগ্রীব হয়ে উঠল ... একা , দোকা , তেকা , দলবদ্ধ , ঘন্টাধারী ও ঘন্টা ছাড়ি রকম বেরকম পোসে। তবে সিঁড়ির লাগাতার ভিড়ের জন্য এসবের জন্য কিঞ্চিত অপেক্ষা করতে হল । সেই অপেক্ষার সময়ে মন্দির চত্বর, আরো সিঁড়ি পেরিয়ে মন্দিরের গর্ভগৃহ , আদি গুরু শঙ্করাচার্যের মূর্তি , ওপর থেকে পাখির চোখে গোটা শ্রীনগরের দর্শন সব কমপিলিট করলাম । সময়ের দাম না দিলে কি চলে নাকি ?? ছবি হল আগের দিন ওই একই গানের বাকি অংশের দৃশ্যায়ন সমৃদ্ধ আরেক মন্দির ও সংলগ্ন উপত্যকা দেখেছি গুলমার্গের হোটেল রুম থেকে ... তা ধরেছি মনের ও জাগতিক ক্যামেরাতে কিন্তু সে মন্দির ধরতাই এর সীমানা তে ছিল না সময়জনিত কারণে । এখানে সে আক্ষেপে ফুলস্টপ দিলাম । এরপরে দুই রঙে রঙিন থিম পরিবার এগিয়ে পড়লাম জগত বিখ্যাত টিউলিপ গার্ডেনের ডেরায় ।
ক্রমশঃ
@শুচিস্মিতাভদ্র
গুলমার্গ থেকে বেরিয়ে পড়লাম শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে , পেটে তখন সবারই বিধংসী ক্ষিদে। বিশেষ করে আমার তখন আকাশ খাই , পাতাল খাই অবস্থান কারণ সকালের শারীরিক গোলমাল ধামাচাপা দিয়েছিলাম দেবাশ্রিতার বানানো চিড়ে সেদ্ধ আর ইলেকট্রল সহযোগে । সে সব পেটের এক কোণায় থাকতে থাকতে হজম হয়ে মিলিয়ে গেছে বটে। আসার পথে নজর করে রাখা একখান হোটেলে আমাদের টিম ১১ ঝাঁপিয়ে পড়ল ... শরীর তখন বেশ গোলমালের মধ্যে থাকলে কি হবে ? হোটেলের বিপরীতে অবস্থিত পশরা সাজানো এম্পোরিয়াম মহিলাদের শরীরে গতির সঞ্চার করল। অপর দিকের ভদ্র মহোদয় গণ যেন কেমন মিইয়ে গেল আরো 🤔 । ঝটপট পাতিলেবু আর এক চামচে ডাল সহযোগে অল্প ভাত চটকে চটপট পেটে চালান করলাম, সাথের বাকিরাও হাল্কা কিছুতে পেট ভরালো ... কেনাকিনির আগাম ভয় ব্যকুলতায় নাকি (?) একসময় নজর করে দেখলাম তিনি হাল্কা ঘামতেছেন । গুরুত্ব না দিলেও পরে বুঝেছিলাম যে তেনার শারীরিক গোলযোগের সূত্রপাতের নোটিফিকেশন তখন আসতে শুরু করেছিল। তিনি এসব ব্যাপারে ভয়ানক চাপা , মাপা কথা বলার দরুণ শ্রীনগর পৌঁছনোর পর বুঝলাম যে শরীর গতিক গণ্ডোলার থেকে ল্যান্ড করার পর থেকেই বিরক্তির ঝাঁপ খুলেছিল ।
খাওয়ার পর সকল মহিলা কূল নিজেদের এম্পোরিয়ামে মেলে ধরলাম । লাগামধারী কর্তামশাই এর জন্য অল্প দেখে আর একখান ব্যাগ ব্যাগস্থ করে ওখানকার তল্পি গোটালাম। চক্ষু মুদিয়া বাসে আসন গ্রহণ করে এবার শ্রীনগর পানে ধেয়ে চললাম। এম্পোরিয়ামজাত উৎসাহে তখন ভাঁটার টান ।
শ্রীনগরের বুলেভার্ড রোডে , সেই স্বপ্নের ডাল লেকের ঘাট নম্বর ৬এর বিপরীতে অবস্থিত জম্মু কাশ্মীর টুরিসমের হোটেল হিমলে আণ্ডা বাচ্চা ও বাক্স প্যাটরাসহ ল্যান্ড করলাম। এরপরে ঘরে ঢুকেই কর্তা গিন্নি দুজনেই খাটিয়া পাকড়াও করলাম। কন্যা মনে খুশি আর মুখে দুঃখ নিয়ে পাশের ঘরে বন্ধুর সাথে যুক্ত হল । কন্যা মুক্ত আমরা অঘোরে ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম ... ঘুম ভাঙল রাত আটটা নাগাদ ডোরবেলের শব্দে । পাশের ঘরের জনতা আমার পুঁটি কে নিয়ে তখন হোটেলের বাইরে চলেছে খ্যাটনে ... আমরা যাওয়ার অবস্থান রহিত জেনে ওরা এগিয়ে পড়তেই ... পত্রপাট আবার আমরা বিছানা আকড়ালাম....কর্তামশাই এর তখন হি হি করে কাঁপুনির সাথে জ্বর হাজিরা দিচ্ছে ... স্বগোতক্তি শুনলাম .... "শরীর আগে । কাল বেরবো না ।" খাঁটি কথা । তবে আমি ছিলাম স্বভাব বিরুদ্ধ রকম আশাবাদী । দেবাশ্রিতা ফিরে এসে মেয়ে সহ এক গামলা চিড়ে সেদ্ধ ডিনার দিয়ে শুভ রাত্রি জানিয়ে বিদায় নিল , তখনই শুনলাম ওদিককার ঘরে আমার দিদির শরীরে ও বিপদ সংকেত ধ্বনিত !!!! বোঝো কাণ্ড !!!!
আমি চিরকালের পেট রোগা , তাই চিড়ে সেদ্ধ খাওয়ার সাথে আমার হরিহর আত্মার সম্পর্ক, কিন্তু তেনার তো চিড়ে সেদ্ধ দেখেই আত্মারাম আঁতকে উঠল .... বাবা বাছা করে খাওয়া পাট চুকলো , নড়বড় করতে করতে তিনি গড়বড়ে শরীর সারাতে ওষুধের প্যাটরা খুলে , ছড়িয়ে খান কতক ওষুধ গলধঃকরণ করে ঘুমাতে গেলেন .... আমিও অনুগামিনী হয়ে শুয়ে পড়লাম ... জ্বর তখন উত্তাপ বাড়াচ্ছে.... এদিকে আমাকে ঘামিয়ে দিচ্ছে চিন্তায় । এ জাতীয় বিষয়ে বেশি চিন্তা আমার আবার সহ্য হয় না !!! অগত্যা ঘুম দিয়ে নিষ্কৃতি পেলাম। সব রাতের শেষ আছে .... ভোরের দোর খুলল , বাবা ও কন্যা তখন ঘুমের ঘোরে , আমি উঠে খুচরো কাজে হাত লাগালাম । মনে আশা নিরাশার দোলচাল .... হেনকালে জাগন্ত হয়ে তিনি ঘোষণা করলেন .... " যেতে পারি , কিন্তু শঙ্করাচার্য মন্দিরের চড়াই চড়তে জোর করা চলবে না । " সম্মতি দিলাম ইতিবাচক দিকেই ... কিন্তু আবার এক আপদের উৎপাত চিতপাত করার তোড়জোড়ে এগিয়ে এল .... তেনার জ্বর গন ( gone ) হলে কি হবে , এবার শুরু হল পৈটিক গুলু গুলু 🤫😔😭 কোন দিকে যে কি সামলাবো ভেবেই খেই পাচ্ছিলাম না । কিন্তু খেই তো পেতেই হবে ভূস্বর্গ বলে কথা !!! অতএব চালাও চিড়ে (সেদ্ধ)ঢালাও । ছোটগিন্নি জানালে কলকাত্তাইয়া চিড়ে টিম টিম করছে । টিম ১১ তো টিমটিমে নয় আর সকাল বিকেল চিড়েতে ভিড়ে গেলে (সবাই নয় যদিও) তা তো ফুরুৎ হবেই। কর্তামশাই তখন খানিক কাঁপুনি মুক্ত.... অভয় দান করলেন সন্ধ্যাবেলায় চিড়ে মার্কেটিং এর ব্যপারে। প্রতিবার চিড়ে , মুড়ি আমাদের সাথে সাথে ঘুরে আবার ফেরত আসে কলকাতায় । এক দুবার বেড়ুর সময় আমার গেঁড়ির কাজে লাগলেও , এমন ভাবে ধাড়ি আর ধেড়ে দের ধরে ফেলেনি । এবার চিড়ে চড় চড় করে নিজের ডিমান্ড বাড়িয়ে , হারানো সম্মান ফিরে পেল ।
সেদিন মন্দির দর্শন করার পর বাগানে আগুয়ান হওয়ার কথা .... আসার আগে ছোটগিন্নি পোষাকের রঙ মিলন্তির প্ল্যানিং করে রেখেছিল। সকলে এক রঙে নিজেদের রাঙিয়ে বাগানে প্রবেশের আইডিয়া জম্পেশ হলে হবে কি ? সে রঙের বায়না মেটাতে আমার কর্তামশাই এর মুখে নানা রঙের খেলা শুরু হল ... গড়িহাটের এক দোকানের সামনে সেই রঙীন মুখ দেখে আমার রঙ উড়ে যাওয়ার উপক্রম !!! শেষমেশ নিদান দিল ছোটগিন্নি .... অন্ততপক্ষে এক এক পরিবার একই রঙে রাঙিয়ে নিও (পোশাক পোরো )। খরচের আপদ বালাই দূর হতেই তিনি ফুরফুরে মেজাজে আমাদের আর দিদিদের জন্য সাদা রঙ বাছাই করলেন .... বলতে নেই টিউলিপের রঙ বেরঙের নজরকাড়া বাগানে আমাদের সফেদ ( হাতি আমরা দুজনা বটে ) আর পিচ রঙা থিম হিট করে গেল ... ছবি তার প্রমাণ।
যাক যে যার থিমের পোষাক পর চিড়ে ( আমরা আর দিদি-জামাই বাবু )খেয়ে আর এক বোতল ইলেকট্রল নিয়ে টিম ১১ মন্দির দর্শনে বেরিয়ে পড়লাম কপাল ঠুকে। টেম্পো ট্রাভেলার পাহাড়ী পথে খানিক এগিয়ে নামিয়ে দিলো , এরপরে যাত্রা অটুট রাখলো অটো তারপরে চেকিং বিরতি মিটিয়ে হন্টনের জন্য অসংখ্য সিঁড়ি দৃশ্যমান হল , কোমরের ব্যাথার দরুণ স্বপ্না কাকিমা মন্দিরের সিঁড়ির পথ ধরলেন না , রইলেন নীচে আমাদের ফেরার অপেক্ষায় । এ দিকে চিড়ে আর ইলেকট্রল সমৃদ্ধ আমার কর্তামশাই কে উৎসাহিত করার রেডিও তো অন্ করাই ছিল ... তিনি পিছু পিছু জিরিয়ে জিরিয়ে আগু পিছু করে এগিয়ে পড়লেন । এক যাত্রায় পৃথক ফল যখন আর পৃথক না রয়ে একে পর্যবসিত হল আমিও জোরালো পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে লাগলাম ... আরেক কাকিমা ( দেবাশ্রিতার শ্বাশুড়ি মা) একবার বলেই ফেললেন ... ওমন করে ছুটে ছুটে উঠে , বলি হবেটা কি ?" ও যে আমার এক আনন্দের বহিঃপ্রকাশ তা আর বলি কেমনে ??
অবশেষে মন্দিরের চত্বরে প্রবেশ করে সবাই সামনের বাঁধাই করা গাছের ঘেরাটোপের ওপর ধপাশ হয়ে দম নিলাম। দিদিরা সবার আগে পৌঁছে তখন দম পর্ব মিটিয়ে উঠে মূল মন্দিরের সিঁড়ির পাণে চেয়ে ভয়ানক উত্তেজিত হয়ে ব্যক্ত করল ... " আরে ?? এই সিঁড়িতেই তো রাজেশ খান্না আর মুমতাজ এর লিপে সেই বিখ্যাত গানের কিছুটার দৃশ্যায়ন হয়েছে !!!! " জয় জয় শিব শঙ্কর " এ বারে উত্তেজনার পারা ঘুরে গেল অনিন্দ্য ওরফে ছোটকর্তার দিকে ... তৎক্ষণাৎ youtube থেকে গান বেরিয়ে পড়ল । এই বার দলের নায়ক ও নায়িকাগণ বয়স নির্বিশেষে সিঁড়িতে ছবি তোলার জন্য ভিড়তে উদগ্রীব হয়ে উঠল ... একা , দোকা , তেকা , দলবদ্ধ , ঘন্টাধারী ও ঘন্টা ছাড়ি রকম বেরকম পোসে। তবে সিঁড়ির লাগাতার ভিড়ের জন্য এসবের জন্য কিঞ্চিত অপেক্ষা করতে হল । সেই অপেক্ষার সময়ে মন্দির চত্বর, আরো সিঁড়ি পেরিয়ে মন্দিরের গর্ভগৃহ , আদি গুরু শঙ্করাচার্যের মূর্তি , ওপর থেকে পাখির চোখে গোটা শ্রীনগরের দর্শন সব কমপিলিট করলাম । সময়ের দাম না দিলে কি চলে নাকি ?? ছবি হল আগের দিন ওই একই গানের বাকি অংশের দৃশ্যায়ন সমৃদ্ধ আরেক মন্দির ও সংলগ্ন উপত্যকা দেখেছি গুলমার্গের হোটেল রুম থেকে ... তা ধরেছি মনের ও জাগতিক ক্যামেরাতে কিন্তু সে মন্দির ধরতাই এর সীমানা তে ছিল না সময়জনিত কারণে । এখানে সে আক্ষেপে ফুলস্টপ দিলাম । এরপরে দুই রঙে রঙিন থিম পরিবার এগিয়ে পড়লাম জগত বিখ্যাত টিউলিপ গার্ডেনের ডেরায় ।
@শুচিস্মিতাভদ্র
No comments:
Post a Comment