Wednesday, 18 December 2024

থানা ছুঁয়ে দেখা

 নানা জায়গার অভিজ্ঞতা নানা রকম । আমরা সাধারণত যে সব জায়গা যাওয়া আসা করি , সেখানেও নানান ঘটনা ঘটে , কিছু মজার , কিছু চিন্তার।  

জীবনে বেশ কয় বার থানাতে হানা দিয়েছি। তিনবার এটা সেটা হারিয়ে তা নথিভুক্ত করতে missing diary করতে গেছি । এই কিছুদিন আগে এক ভিন্ন কারণে সেখানে হাজিরা দিলাম। 

কিছু চিন্তাজনক কারণজন্য মেয়েকে যার কাছে রাখতাম তাকে বরখাস্ত করেছিলাম। সে বাড়ি এসে পরেরদিন হামলা স্টাইলে হুংকার দিলো ... সে রোগা পাতলা হলে কি হবে তার ওই রণচণ্ডী রূপে আবির্ভাবে আমরা মোটা আর মুটি যারপরনাই মুষিক তখন। আমার শরীরে তখন ভীতি জনিত কাঁপন ধরে গেছে । ছোটকালের বান্ধবী পারমিতা সহ আরো অনেকেই বললে ...  সাবধান সাবধান সাবধান !!!

পরামর্শ মতন জায়গা মতন কথা হল ... শুনে তেনারা 👮‍♂️👨‍✈️অভয় দিয়ে আমাদের লেখা চিঠির ভিত্তিতে সব লিপিবদ্ধ করবেন বললেন .... যিনি লিখি পড়ি করবেন তার পিছনে দেখলাম মেঝেতে থাবা গেড়ে এক ছিঁচকে চোর বসে আছে । বসার স্টাইলের সাথে চিড়িয়াখানার খাঁচার ভিতরের হালুমের মিল মালুম হচ্ছিল , কিন্তুক সে পরে খাঁচা থুড়ি লকআপে চালান হলেও তখন বাইরেই বিরাজমান ছিল। আর আসে পাশে জেনারেল ডাইরী লেখাতে আসা আমাদের মতন কজনা একই রকম ছানাবড়া চোখ মেলে বসে ছিল । পুরো অন্য জগত। 

এর মধ্যেই আরেক মহিলা পুলিশ এসে তার জিম্মার কেসগুলি কে কোথায় সেট করবেন তা নিয়ে ছানবিন চালিয়ে গেলেন । সবটাই মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল । হেনকালে মন দিয়ে চিঠি পড়ে নিয়ে মাথা নাড়িয়ে আমাদের ঘটনা কে লিপিবদ্ধ কারী ভদ্রলোক বললেন .. গলা গম্ভীর...." বুঝলাম ... ডাক্তার বাবু তাহলে স্ত্রীর দ্বারা অত্যাচারিত হচ্ছেন , স্ত্রী দুর্ব্যবহার করছেন । " 🙄 

আমি এমনিতেই কম শুনি , ওই পরিবেশ আরো সব ঘেঁটে দিয়েছে তাই বেশ পরে ব্যপারটা বুঝে প্রথমে আঁতকে উঠলাম ... সন্দেহ নিয়ে তেনাকে জিগালাম ... " চিঠিতে কি লিখেছ ??? 🤔 যদিও চিঠির বয়ান আমার জানা ... চিঠি আমি পড়েছি , ওখানে পদার্পণের ঠিক আগে .... কি বুদ্ধিমান পতিদেব আমার  ... আগে ভাগে পড়াশোনা করিয়ে দিয়েছে  !!!! আমি যথারীতি পড়তে চাইনি , তিনি বলেছেন ...  না না পড়ে দেখো !!! 

আরেক অফিসার ব্যপারটা সামলে দিলেন , কর্তামশাই বললেন ... স্ত্রী তো আমার পাশেই।  

এই কথা বলে কি বোঝাতে চাইলেন কে জানে ?? কোথায় প্রতিবাদী হবেন তা না !!! 

আরেকটু হলে কি হোতো বলো দেখি ??? 

কাল কর্মস্থলে এই গল্পের ভিত্তিতে এমন বিদগ্ধ আরো গপ্প ভাঁড়ারে জমা হল .... সে না হয় পরে বলা যাবে কখনও।

এসো হে বৈশাখ

 এসো হে বৈশাখ এসো এসো 🎶🎶🎶🎶 ... এই সাদর আহ্বানে সাড়া দিয়ে গরম গরম  গ্রীষ্মের আগমন হতে না হতেই গান বদলে যায় ... দারুণ অগ্নিবাণে রে !!! কি মুশকিল বলো দেখি !!! তবে আমার সব সময়ের ভালবাসার মাস শীত । এ বছরের শীতে নানান আপদ বিপদের ভারে জর্জরিত থাকলেও শীতের প্রতি প্রেম ভালবাসা কমার প্রশ্নই নেই আমার কাছে । গরমের নানান কষ্টের গল্প লেখার বদলে আজ তার মধ্যেও খুঁজে পাওয়া ভাল র কথা লিখতে বসেছি । আমার মনে হয় কোন ব্যক্তির , কোন বিষয়ের সব কিছু নেতিবাচক হতে পারে না । হয়ত আমি ভুল হয়ত আমি ঠিক ... জানা নেই। আমার এ ভাবে ভাবতে ভাল লাগে। সব সময়ই যে ওমন ভাবে ভাবতে পেরেছি তা নয় , তবে চেষ্টা করি । 

গরমের শুরুতে ভোরের আমেজটা just অসাধারণ থাকে । হাল্কা ঠাণ্ডার মাঝে নরম রোদ আর সাথে পাখিদের কলকাকলি। এক সময় হঠাৎ খেয়ালে ভোরের দিকে ছাদে হাঁটার চেষ্টা করেছিলাম ( গত বছর দুয়েক গরমের শুরুর দিকে [সাময়িক ] ) ... কতশত পাখি যে আকাশ জুড়ে উড়ে যেত ডাকতে ডাকতে তা বলার নয় । মনে হতো বা ওদের দখলে তখন জগত সংসার । 

বিকেলের কালবৈশাখীর পরের ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাঁপটা যখন চোখে মুখে লাগে ( মাইনাস ধুলো 😄 ) আহা !!! ধুলোর জন্য হোক বা ঠাণ্ডার আমেজে চোখ বুজিয়ে ফেলি কিনা ভেবে দেখিনি , ভাই 🙏🏻 । তবে সেটা দারুণ অনুভূতির জনক বৈকি !!!

এ সময়ের উপযোগী ফলের ভাঁড়ার পূর্ণ করে দিয়েছেন স্বয়ং উপরওয়ালা। সব রসে টইটম্বুর। সে অমৃতফল হোক , কি তরমুজ, কি আনারস । আরো রসে বশে বাঙালির থুড়ি সারা দেশবাসীর ( গ্রীষ্ম প্রধান অঞ্চল) রসনা তৃপ্ত করতে হাজির রসালো সব ফল। কেটে খাও , শরবত বানিয়ে খাও। কাঁচা আম পোড়া শরবত ।পাকা আমের শরবত । ফলের যদি অগ্নিমূল্য হয় , তাহলে চলতে পারে পাতিলেবুর শরবত ... আহা !!! গরমের দিনে প্রাণ জুড়িয়ে যায় না ? এ ছাড়াও আছে দই এর সুস্বাদু ঘোল । এ ঘোল খুব উপকারী আর সাদামাটা । কেন যে দ্বর্থক হিসেবে এমন একজনকে বেছে নেওয়া হল কে জানে ??

গরমের দিনের হাল্কা খাবারের খুব আদর কদর , অন্য সময়ের থেকে । সে নিম-বেগুন হোক , হাল্কা কালোজিরে - বড়ির মাছের ঝোল হোক , লাউ দিয়ে মুগের ডাল , পাঁচফোড়ন দিয়ে পাতলা মুসুর ডাল , তেতোর ডাল , টক ডাল , শুক্তো, আমের টক .... সব রান্না গুলো যতোই হাল্কা হোক , খেতে কিন্তু একঘর। আর পেটের জন্য বন্ধু শুলভ। 

বিকেলে কখনও কখনও আকাশের ঈশাণ কোণে ঘন মেঘের দেখা , যা আস্তে ধীরে সারা আকাশে ছড়িয়ে তুমুল কালবৈশাখী ... যদিও এখন চারিদিকের পরিবর্তনের ছোঁয়া থেকে আবহাওয়ারও রেহাই মেলেনি তাই কালবৈশাখীর দেখা মিলতে দেরি হয় ... তাও একদিন আসে তো বটেই । ক্যালেন্ডার মেনে আর কোন কাল আসছে এখন !!!

ঝড় বাদলের পরের আরাম আরাম ব্যাপার টা বেশ দারুণ লাগে তাই না ??? এ সবের পরে আছে ... গরমে জল ছপাছপ স্নানের আরাম । দিনের শুরু হোক , শেষ হোক  ... যখন তখন । হাল্কা সুতির পোশাক, গা ভর্তি ট্যালকম পাউডার, ঘামের ওপর পাখার হাওয়ার ছড়িয়ে পড়া আরাম ... আর গরমের আরামে আলাদা মাত্রা যোগ করতে আছে অবশ্যই আইসক্রিম .... আর আছে গরমের বিকেলের গঙ্গার ধার নাকি আমাদের দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর লেক ... তাহলে গরমের সবটা বোধহয় খারাপ নয় । তবে তাও আমার ভোট পাবে সেই শীতের দিন - রাত । 

আসলে সবার ভাল লাগার শর্ত যে আলাদা রকম । তাই সব ভাল সবার দ্বারা গ্রাহ্য হয় না। তাতে ভালোর ভালত্ব কি কমে ?? একদমই নয় । 😊😊😊😊

#copied 

...Suchismita Shipi Aunty

চিত্র বিচিত্র

 " আরে তোর আঁকা ছবিতে আমরাই বাদ ??? " ----- মায়ের প্রশ্নের উত্তরে একটুও না ঘাবড়ে পুপের জবাব  ... " ধরলো না তো !! কি করবো ?" 

ইদানীং তো আঁকায় আক্রান্ত আমাদের পুপে । যেখানেই যান আমার ফিদা হোসেন আঁকতে বসেন ... অনেকেই বেশ ফিদা ওনার গুণ পানায় । আর আমি ভাবি 🤔... যে কদিন করছে করুক । 

আঁক কষতে বসলে তো আঁকসি বাগিয়ে ধরেও সংখ্যা যথাস্থানে প্রয়োগ হয় না !!! একই অঙ্কে যা যা শেখা হোলো তার সব গুলো apply করেও বেচারী করো মন পায় না ।  🙃😛... গুণ করতে গিয়ে mix & match করে ওতে খানিক খানিক গুণ এবং অন্য আরো জ্ঞানের যোগ করে , বাবাকে তাক লাগিয়ে দেবে ভাবল  !!! কিন্তু 🤐 বাবা তো খুশি হলোই না , উল্টে রেগে আগুন হয়ে বলেই দিলো "তুই একটা বে-গুন !!!! " কি দুঃখের কথা বলো দেখি .... মাকে বলেছে পুপে...." ওমন করলে আমার বুকে কষ্ট হয় , মা 🙄" 

আমাদের কালে বকুনি খেলে কোথাকার কষ্ট কোথায় উঠতো ---- সত্যিই বলছি একদম মনে নেই কো । 

তো অঙ্কন চলুক ... কিন্তু বাদ দেবে তাতে আমাদের  ??? এই তো সেদিন একজনের প্রশ্নের উত্তরে ঘটা করে যা রাষ্ট্র করে এসেছে সে চত্বরে , কোথায় লুকোই সেই জায়গা খুঁজছি সেদিন থেকে !!! 

আর কিছুই না , প্রশ্ন ছিল নেহাৎই সহজ সরল ... " আচ্ছা পুপে দিদি , কে তোমাকে বেশি আদর করে মা নাকি বাবা ??? " 

উত্তর একদম মার কাটারি !!! কিন্তু হাতে হ্যারিকেন টাইপের ---

 " আমাদের বাড়িতে সবাই সবাইকে আদর করে .... মা আমাকে, আমি মাকে , বাবা আমাকে , আমি বাবা কে .... " এই ওবধি গাড়ি লাইনেই চলছিল ... এর পর 🤫 অন্য ট্র্যাকে ... বেলাইনে গড়গড়িয়ে এগলো আর প্রশ্ন যে করেছে এবার তার গড়াগড়ি দিয়ে হাসির পালা !!! আর সে কি একা হেসে পার পেলো ?? ওদিক পানের সবাই ওই খরচে হেসেই খুন হলো -----  

তো এমন বর্ণনার পর কিনা ছবি থেকে এমন দুজন আদর-কারীদের অদরকারি মনে করলি ??? 

" না না এই তো দেখো তোমাদেরও আলাদা এঁকেছি " 

পুপের বুদ্ধি আছে দেখা যাচ্ছে ... আর (সান্ত্বনা?) পুরস্কার পেয়ে আমরাও খুশ্ ।।

দোষ কারো নয় গো মা

 মা একটা কথা বলতেন , আগে দেখনদারি পরে গুণবিচারী , কথাটা খুব একটা মানতে না পারলেও,  কার্যত অনেক ক্ষেত্রেই এই সত্য উপলব্ধি করেছি আগেও , এখনও।  

মজার কথা হল , সাজ গোজ ব্যাপারটাতে বরাবরই আমার দৌড় বেশ পিছনে । তখনকার জামিনী শাড়ির বিজ্ঞাপনের ট্যাগ লাইন আমার ছিল পছন্দের সাজের definition ... তোমাদের অনেকেই যারা আমার সমসাময়িক , জানো সেই বিজ্ঞাপিত বাণী ... ছোট্ট টিপ , হাল্কা লিপস্টিক আর শাড়ি । 

সাজের ক্ষেত্রে রাতের অনুষ্ঠান আর বিয়ে বাড়িতে ওষ্ঠরঞ্জনী হালকার জায়গায় হয়তো গাঢ় হয় , এই যা পার্থক্য । 

সাজের ব্যাপারে আমার সুমিত্রা দি র ( সুমিত্রা সেন ) গানের ক্লাসের (তখন শিখতাম )এক দিদি , শক্তিরূপা দি , পেশাগত ভাবে সিনিয়র গাইনোকোলজিস্ট একবার বলেছিলেন ... ব্যাগে একটা ফেস ওয়াস আর লিপস্টিক রাখি , সারাদিনের কাজের ফাঁকে সুযোগ মতনই ফ্রেস হয়ে , একটু লিপস্টিক লাগিয়ে নিই । শুনে  ভাল লাগলেও,  নিজের ঘরের চৌহিদ্দির বাইরে লিপস্টিক লাগানোর ক্ষমতা আমার সেদিনও ছিল না , আজও নেই। 

কলেজে পড়ার সময় সাজার সুযোগ ছিল , মায়েরও হাল্কা সাজে আপত্তি ছিল না , কিন্তু যাদবপুরের ফেস্ট ছাড়া অন্য সময় সাজন গোজন হোতো না আমার দ্বারা , ফেস্টের সময় সেজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরিচিত এক কাকুকে দেখে উল্টো পথে ঘুরে ঘুরে বাস স্ট্যান্ড গিয়েছিলাম,  এখন ভাবলে হাসি পায় 😄

মা চিরদিন ই ছিলেন ফিটফাট । তবে মাকে কখনো সাজতে দেখিনি  তেমনভাবে । শুনেছি বাবা অফিস ( ১০টা - ৫টা ) থেকে ফেরার আগেই মা , সুন্দর করে চুল বেঁধে , সারাদিনের পরা শাড়ি পরিবর্তন করে অপেক্ষা করতেন । মাকে আমি সব সময়েই পরিপাটি দেখতাম । বিপরীতে মায়ের মেয়ে বাড়িতে থাকলে সাক্ষাৎ শেওড়াগাছের বাসিন্দা মনে হোতো মায়ের । বলতেন ... কি যে ভুতের মতন থাকিস বাড়িতে ? তো আমার ঘরে ওমনই ভাল লাগে , মা রাগ করতেন । 

     আমার স্কুলের বন্ধু হৈমন্তীর মা , কাকিমা ছিলেন খুব সাদাসিদে , ঘরে থাকতেন অনেকটা আমার মতন , ভবানীপুরের বাড়িতে একদিন সবাই যখন বেরিয়েছে , কাকু অফিসে, হিমু স্কুলে আর ওর দাদা কলেজে ... আগমন এক সেলস গার্লের , কাকিমা দরজা খুলেছেন হাতে ঝাঁটা .... কিছু বলার আগেই কাকিমা ... " বৌদিমণি , দাদাবাবু কেউ নেই , পরে আসবে কেমন? " 🙃😇 

পত্রপাট সেলস গার্লের প্রস্হান ।

তো ভুত / পেত্নির মতন থাকার এটা হল গিয়ে ইতিবাচক দিক । তাই না ?? খতিয়ে দেখলে প্রতি বিষয়ের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক থাকে । যে দিকের পাল্লা ভারি , আমরা সেটাই মনে রাখি , এই যা !!!

সাধারণত ঘরের থেকে সামান্য উন্নত সাজে , পাড়ার দোকান আর একটু দূরের বাজারে যাই । ধরো একটা মোটামুটি ভদ্রস্থ পোশাক , চুলটা ক্লিপ করা যাহোক করে । 

কোভিড এর প্রথম লকডাউনের কিছু আগেই পাড়ায় খুলল এক নতুন মেডিসিন সপ্ । টপ করে ওই সময় তারা হোম ডেলিভারি শুরু করে , বাজার জমিয়ে নিল , দোকান থেকে যে নিত্য ওষুধ সরবরাহ করে , তাকে ছাড়া কাউকেই চিনি না , এমনকি সে মুখেও মুখোশ,  কাজে সেও খুব পরিচিত নয় । মাস খানেক আগে কিছু মেডিসিন বাড়িতে না দেওয়ায় , পাড়ার দোকান থেকে ফেরার পথে , ওষুধের ডাক খোঁজে হাজিরা দিলাম ... অচেনা আমাকে দেখে খুব একটা পাত্তা তো দিলই না , উপরন্তু বেশ খারাপ লাগা নিয়েই ফিরলাম ... ছোটবেলায় পড়া একটা কবিতা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ... কুকুরের কাজ কুকুর করেছে কামড় দিয়াছে পায়ে , তা বলে কুকুরে কামড়ানো কি মানুষের শোভা পায় ? " 

গত মঙ্গলবার , আবারও আমি ওই দোকানে গেলাম আমার একটা ওষুধের খোঁজে...ব্যবহারে আকাশ,  পাতাল প্রভেদ চোখে পড়ল , কারণও পরিষ্কার বুঝলাম  আর বুঝে মনে মনেই হাসলাম ... বুঝতে পারলে কি তোমরা ?? পারোনি তো !!! খোলসা করি তবে ... মঙ্গলবার আমি ওখানে গিয়েছিলাম কলেজ যাওয়ার পথে , সাজ গোজ ছিল একেবারেই জামিনী শাড়ির ট্যাগ লাইন অনুসারে ... তাতেই আমাকে কোন এক তালেবর ঠাউরে এত মিষ্টান্ন সদৃশ ব্যবহার।  

 মুখে যাই বলি না কেন , আমরা এখনও দর্শনকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি , আরো একবার প্রমাণ পেলাম...

#দোষকারোনয়গোমা



টীকা র টিকি

 " টীকা " শব্দটা নতুন কিছুই নয় , কিন্তু হঠাৎই নতুন get-up এ আমাদের দরবারে হাজির।  নেবো কি নেবো না ... এই দ্বিধায় ধরাধামের জনতা বেশ ভাবিত । আসলে টীকা বলতেই ..... ছোট্ট কালের কথা মনে পড়ে কি পড়ে না ... এমন একটা বোধ হয়। তো কথা হল , তখন টীকা নিয়ে টিক টিক করার ব্যাপারটাই missing ছিল।   কে আর তখন  ছোট্ট  সত্তার মতামত নিয়ে , তাকে  মানুষ বলে গণ্য করেছে !!! ধর তক্তা , মার পেরেক স্টাইলে কোলে কোলে টীকাকরণ কেন্দ্র বা শিশু বিশেষজ্ঞের দরবারে নিয়ে গিয়েই খেল খতম ।  কি নিষ্ঠুর !!! এরপরও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ... চকোলেট,  লজেন্স নামক টোপ দিয়ে .... । অনেক আপত্তি জানিয়েও লাভের লাভ কিছুই হয়নি !!! কোনও বাঁধা দানই ধোপে টেকেনি ।😔

   কিন্তু পরিবর্তনের হাত ধরে এখন নানা বয়সে , নানা রকম টীকার প্রচলন হয়েছে নিজেকে আরো খানিক টিকিয়ে রাখতে ... আর এখন আমরা বেজায় বড় হয়েছি , তাই মতামতের মূল্য আর কেউ না দিক , নিজে তো দিতেই পারি !!! 

    বাজারে এলো স্লীভহোল জামা । স্লীভলেস আগেই ছিল , এ তার ওপর এক কাঠি । একটু উকি , টুকি স্টাইল  বটে ।এর ডিজাইন দেখে আমার মনে হয়েছিল এ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য একদম আদর্শ । স্লীভহোল নামটা আমার দেওয়া , ও নিয়ে ভাবার কিছু নেই কো !!! আমার ছোটদি ওই জামা পরিহিত এক ললনাকে দেখে ভয়ানক রেগে বলেছিল ... " গরমের রোদে হাত গুলো কেমন বিকট রকম আধা খ্যাচড়া sun burn হবে বল তো ??? 😡 কথাটা বেশ ভাবনার । কিন্তু সে ভাবনা ভাবার সুযোগ পেলাম কই ??? আর তার পর পরই সারা জগত জুড়ে কি হৈ চৈ , কি ভয়ানক পরিস্থিতির ভাবনা সবের দখল নিয়ে নিল  !! ভয়ানক ভাইরাসবাহি অতিমারি।ভ্যাকসিনও হাজির , দুরকম । 

   কিন্তু নিলেই যে কেল্লা ফতে ... ওমন ভাবার কারণ কোথায় ?? ভালো preparation er পরও পরীক্ষা ভাল হয় না , ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফলাফল গুবলেটের নজির প্রচুর ... তাতে কি পড়াশোনার পাট উঠে গেছে জগত থেকে ? এও তাই ... জীবনে কোন কিছুই নিশ্চিত নয় যেখানে , সেখানে সামান্য টীকা যে এবারের বিপদের থেকে পুরোটাই রেহাই দেবে এমন ভাবাটা বাড়াবাড়ি নয় কি ???

এই কারণ জন্য অনেকেই ভাব সাগর সাঁতরে চলেছে তো চলেছেই ... যাবো কি যবো না , ভেবে ভেবে হায় রে .... 

   আরো একটা কারণ আছে বটে 🤣🤫

ভাবো , ভাবো ... এই তো একদম ঠিক লাইনে ভেবেছো । ৪৫ বছরের age group টা খুলে দিয়েই কাল হয়েছে , ওটা যদি ৩০+ হতো দলে দলে মহিলা মহল হাজির হোতো ... কিন্তু  বয়সের ওই সংখ্যাতেই আটকে আছে অনেকে । চুপিচুপি বলি আমি আর আমার এক বান্ধবী প্রথম দফার টীকাতে টিক মেরে এসেছি ... টীকা দিতে গেলাম সপ্তাহ দেড়েক আগে .... অনেক খোঁজাখুঁজির পর টীকা করণ  উপযুক্ত ( কিছুটা😒)পোষাক পাওয়া গেল । কেন্দ্রে গিয়ে দুকান জুড়িয়ে গেল বটে !!! মুখোশধারী মেডিক্যাল / প্যারা মেডিক্যাল অফিসার যখন বললেন ... " আপনাদের ৪৫ হয়েছে তো ??" 

মুখে বিগলিত হাসি যদিও মাস্ক বন্দী , মনে মনে বললাম... কটা টীকা দেবেন দিন না কেন ? কোনো আপত্তিই নেই , ভয় নেই,  যখন দেবেন , যেভাবে দেবেন ... সবেই রাজি ,আমি আজি ।" 

বিশেষজ্ঞ(?) বলছে প্রথম ডোজ নিয়ে বিপদ আছে , ৬/৮ সপ্তাহের পরের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার  দুই  সপ্তাহ পর তা কার্যকরী কিন্তু তাতেও বিপদ আছেই 🙄🤔 ।সোনার কেল্লার মন্দার বোসের মতন বলতে ইচ্ছে করছে .... লে হালুয়া !!! নাকি লে ভ্যাকসিন 😶

 বাড়ি ফিরে whatsapp group এ ছোত্তকালের বন্ধুদের এই ঐতিহাসিক টীকাদান জানাতেই ঝড় বয়ে গেল ... কয়েকজন বলেই ফেলল আমরা এখনও ছোট বটে !! তবে আমি কি কেলাসে ঠিক মতন উত্তীর্ণ হইনি ??? আতঙ্কিত হতে হতেই এক বান্ধবী হাল ধরল, আমিও হালে পানি পেয়ে নিশ্চিন্ত হলাম বটে ... সে বান্ধবীর এক কথা বয়স তো একটা সংখ্যা মোটে !!! এ নিয়ে কচকচি ?? মনটাকে সবুজ রাখ না বাপু ... এই না বলে আমার বন্ধুনী তার খানকতক সবুজ ও অবুঝ ছবি group এর আঙিনায় সাঁটিয়ে দিল ... 

অতএব বন্ধুগণ ভাব সাগর পেরিয়ে তীরে উঠে পড়ো .... দলে দলে যোগ দিয়েই ফেলো !!!

Power cut

 কবিগুরু  সুরে সুরে যেমন বলেছেন " এসো হে বৈশাখ এসো এসো "... আবার এমনও বলেছেন ... "দারুণ অগ্নিবাণে রে !!! " তবে গীতবিতানে প্রকৃতি পর্যায়ের পর্যালোচনা করলে কিন্তু দেখা যায় বর্ষার বরিষণের অঝোর ধারা ঝরে পড়েছে বারংবার। তাতেই মনে হয়েছে কবি হয়তো বা বোলপুরের বৃষ্টি সর্বোপরি বর্ষার প্রেমে মাতোয়ারা ছিলেন । হবে না ই বা কেন ... বর্ষার বৃষ্টি ধারায় সমগ্র প্রকৃতি যে সতেজ হয়ে প্রাণ প্রাচুর্যে ভরে ওঠে , মেতে ওঠে । এ দিকে গ্রীষ্মের ঘর্মাক্ত কলেবর নিয়ে আর যাই হোক কাব্য হয় না সাধারণের । বিশ্ব কবির ভাঁড়ারেও  গরমের বন্দনা নেহাত ই অল্প সল্প  !! তবে হক কথা হল এখনকার তপনের প্রখরতা মারাত্মক রকম বৃদ্ধি পেয়েছে !!! সেই সাথে অনেকদিন পরে ,  আমরা যারা আশিতে স্কুলে যেতে শুরু করেছিলাম তখনকার মতন যদি আঁধার রাতের হ্যারিকেন ( যার পাট আর নেইকো) পর্বের কিছুটার পুনরাবৃত্তি হয় তো গল্প পুরো জমে ক্ষীর !!! 

গত বুধবারে রাজ্য থুড়ি দেশ জুড়ে ধর্মীয় ছুটি ( প্রায় প্রায় সকলের ) ছিল। মঙ্গলবার রাতের আঁধারের বিভীষিকা তখনও আঁধারে ই বিরাজমান ... পরেরদিন ভোরে ওঠার পাট নেই ভেবে আনন্দ নিয়ে শুতে গেলেও ... পরের ভোরের বদলে মাঝরাত থেকেই পাড়াময় সকলে জেগে উঠে ঘুমের বদলে ঘাম সহ রাত কাটালাম। 

কারণ জানাতে ফোনের দরবারে CESC হাজির। সাথে আগাম জানিয়ে দিলেন তারা দুঃখিত। ট্রান্সফর্মার দুম ফটাস !!!! দু তরফের গাফিলতির গল্প থাকলেও ভোগান্তি সকলের আর সারাইকারীদের ভোগান্তি যে চূড়ান্ত তা বলা ই বাহুল্য। 

এমন আঁধার রাতে আমাদের ছোটকালে আমি মায়ের সাথে গানের লড়াই খেলতাম ... স্মৃতির ওপার থেকে এদিকের মা-মেয়ের দিকে চোখ ফেরালাম। মেয়ে আমার ,  তার জন্ম ইস্তক লোডশেডিং এর গপ্পো ই শুধু শুনেছে এবারে প্রত্যক্ষ করে যারপরনাই আতঙ্কিত!!! বেচারী র ঘামের গুঁতোয় গলা বসে জ্বর এসে গেছে। একেই সূজ্জি মামার রাগত দৃষ্টিতে এ সপ্তাহের শুরুতেই তিনি লু লাগিয়ে sweet home এ রয়েছেন বিশ্রামের আর ঘ্যানোর ঘ্যানোর করছেন ।

তো সেদিন গরম গরম রাতের আঁধারে গানের লড়াইয়ের রিপিট টেলিকাস্ট শুরু করেই হোঁচট খেলাম ... ঘর থেকে লোকাল গার্জেন জিগাইলেন ..." মা মেয়ে কি পাগলে গেলে ?? " মূর্তি মান রসভঙ্গ !!! সবে দরদ দিয়ে গান ধরেছিলাম ঘাম ভুলে ... " রাত এখনও অনেক বাকি 🎶🎶 ।" দিলো জল ঢেলে ... আগে দিত না কিন্তুক!!  টাক নেড়ে তাল দিত 😡 । যাক ওসব কানে গেলেও মনে নিতে নেই । আর সত্যিই কি দারুণ গান নির্বাচন করেছিলাম বলো !!! তখন সত্যিই রাত অনেকখানি বাকি ছিল । 

যাক এর আরো কিছু পর আলো আমার আলো ওগো গাইবার মতন আলো এলো .... তবে যেই গিয়ে পিঠ খাটে ঠেকিয়েছি না ঠেকিয়েছি .... আবার তিনি হুস করে চলে গেলেন মন পুরো টুকরো টুকরো হয়ে ঘামে দুঃখে ভিজে একাকার হয়ে গেল !!! আর মনে বল পেলাম না ... নির্জীব হয়ে শুয়েই রইলাম। পুপে এবার গরম কে কাঁচকলা দেখিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল ওদিকে তিনিও নাক মারফৎ ঘুমের জানান দিলেন । আমি একাকী জাগন্ত। আবার পাখা চলমান হতে এবার ঘুম দিলাম । কিন্তুক দেড়ঘন্টার মাথায় পাখাও বন্ধ হল আর জাগন্ত হয়ে দেখি ভোর হয়েছে । ৫ . ১০ ঘটিকা । আবার তিনি এলেও সাড়ে ছয় টার দিকে নেই হয়ে গেলেন। তখন আমরা কেমন হতাশ হয়ে আশা ছাড়া হয়ে ঘেমে নেয়ে গপ্প ও দৈনন্দিন কাজে লেগে পড়লাম।  পুপে দেবী তখনও ঘুমিয়ে আছেন ... এই সব যাওয়া আসা র তোয়াক্কা না করেই। এরপর আরো আসা যাওয়ার পাট চালু থাকতে থাকতেই একদম আধা বাঙালি স্টাইলে দুপুরে মেয়ে আর বাবা কে হাত পাখার বাতাস সহ খাবার টেবিলের দুদিকে বসিয়ে খাওয়ানো হল এই শর্তে ... যে , আমি বাতাস খেতে খেতে খাবার খাবো !! কিন্তুক  ওদের ( CESC ) তর সইল না ... ওমনি সব সারাই শেষে পাখা চালু হল । খাবার খেলাম বটে তবে হাত পাখার বাতাস টা আপাতত pending রইল । পরের ক্ষেপে ওটা আগে খেয়ে নিতে হবে । কারণ ভিতরের খবর ... এ বার আমরা ছোটবেলার মতন লোডশেডিং সংক্রান্ত নস্টালজিক হওয়ার বিস্তর সুযোগ নাকি সকলেই অল্প বিস্তর পাবো ।

শাড়ি কাহন

 ছোটবেলার খেলার সাথি ছিল দু বাড়ি পেরিয়ে থাকা সংযুক্তা। ছাদে ছাদে বয়ে  চলত কথার মেল ট্রেন। হতচ্ছাড়া ফ্ল্যাট বাড়ি মাথা চাড়া দিল ... ছাদ বার্তালাপ বন্ধ হল ।  মন খারাপের তোয়াক্কা কে করে ওই বয়সে ?? বাড়ি বাড়ি বাড়াবাড়ি যাতায়াতের মধ্যেই দিন যাপন চলতে লাগল। 

পুতুল খেলার সাথে সাথে  স্কুল টিচার খেলা ছিল কমন । আর তাতে শাড়ি পরা মাস্ট।  সেই শুরু !!! সংযুক্তা যদিও আমার থেকে ১১ মাসের ছোট ছিল কিন্তুক শাড়ি পরত দুরন্ত। মায়ের দুখান শাড়ি দুজন পরে আর গামছা দিয়ে মাথায় খোপা করে আমরা টিচার টিচার খেলতাম। সেই শুরু আমার শাড়ি প্রীতি।

ভয়ানক রকম শাড়ি পরেও প্রীতি থেকে তা কখনোই ভীতি তে পরিণত হয়নি। কতবার শাড়ি পরে বেকায়দায় পড়েছি , যখন খুলে গেছে  পথে ঘাটে ( সে সব আরেক গপ্পো) 😄!!! 

শাড়ি কেনার খেয়াল অনেক পরের ... বলা ভাল বিয়ের পরের সংযোজন।  আগে সুযোগের আর ট্যাকের বিস্তর সমস্যা ছিল। সমস্যার রেশ এখনও আছে , তবে স্বাকার হলে চুপচাপ ফুলে ছাপের পদ্ধতি চলে চোরাগোপ্তা ভাবে । 

গতকাল zee5এ একখান শাড়ি সংক্রান্ত ওয়েব সিরিজ দেখলাম। গল্প সাধারণ । কিন্তু শাড়ি জড়িয়ে তা আমাকে জড়িয়ে ধরল .... বিশেষ এক শাড়ি পৈঠানী।  যা মহারাষ্ট্রের ট্র্যাডিশনাল শাড়ি। পৈঠান অঞ্চলের শিল্প। এই শাড়ির আঁচলের এক বিশেষত্ব হল  এই যে এখানে টিয়া অথবা ময়ূরের কল্কা  থাকে। টিয়ার ডিজাইনের মূল্য ময়ূরের থেকে কম। আমার দিদির ছেলে মজা করে বলেছিল ... " কাকের পৈঠানি ডিজাইন নেই মাসি ?   তার মূল্য আরো একটু কম হোতো  তবে !!! " 🤫

তাঁতে হাতে বোনা হয় রেশম আর সোনার সুতো দিয়ে। তাই তার দাম আকাশ ছোঁয়া। গল্প এক পৈঠানি শাড়ি বোনা কারিগরের। যার নাম গোদাবরী।

এই শাড়ির কথা প্রথম শুনি আমার বিবাহ পরবর্তী বান্ধবী জিনিয়ার কাছে আমাদের মুম্বাই যাওয়ার আগে। মুম্বাই গিয়ে এ দিক ওদিক খোঁজ লাগিয়ে খান দুই তিন পৈঠানি কারখানায় গিয়ে নিরাশ হয়ে ফিরেছিলাম । আজ থেকে ১৪ বছর আগে ২০১০ সালে যখন মুম্বাই গিয়েছিলাম তখন ওর দাম শুনেছিলাম ৫০০০/- থেকে শুরু। শুরুর দাম শুনেই মোর বক্ষ দুরু দুরু 🤪 ... এখন মূল্য কোথায় উঠেছে তার খানিক নমুনা ওই সিরিজেই পেলাম । চক্ষু ছানা বড়া করে জানলাম সর্বোচ্চ মূল্য নাকি লাখের ঘরে এখন .... কয় কি ??? হরি বোল !!!!

পরে সেবার , মুম্বাই ডে ট্যুর করতে গিয়ে মুম্বাই নিবাসী এক বাঙালি পরিবারের সাথে আলাপ হয় । তাদের কাছে শুনি , ওরাজিনালের বদলে সেমি পৈঠানি কিনলে দাম ওতো হবে না । 

সে যাত্রায় অন্য দুখান শাড়ি কেনার পর পৈঠানি বিহনে ঘোরার পালা সাঙ্গ করে  ঘরে ফিরে আসি।

আমার মুম্বাই নিবাসী ছোটবেলার আরেক বান্ধবী এষা, পরে আমার অনুরোধে মুম্বাই থেকে সেমি পৈঠানি কিনে এনেছিল ... 

অনেক বছর পর ওই ওয়েব সিরিজ স্মৃতিতে উস্কে দিল ...

চক্ষু চড়কগাছ

 বয়সের সাথে সাথে শরীরের গতি প্রকৃতির অদল বদল হতেই থাকে। নতুন কিছু নয় বটে , তবে যখন যার হয় তার কাছে ভয়ানক রকম নতুন 🤫। কল কব্জা বিকল না হলেও গড়বড় করছে বিস্তর।  বিস্তারিত সার্ভিসিং জরুরি হয়ে পড়ছে। 

কিছু বছর ধরেই এমন নব নব উৎপাতে এক একবার চিতপাত হচ্ছি , আবার খানিক মন থেকে মেনে নিয়ে তা সারাই এর দিকে মনোনিবেশ করছি।

হালে মাস দুয়েক ধরে চোখ নিয়ে আতান্তরে পড়েছি। চোখে জল , চোখে বেদনা আর এমনিতেই অনেক কিছু চোখে পড়ে না তা ওমনিতেও সামিল হয়ে ঝাপসা পানা দেখে ভয়ানক গোলমাল করে ফেলেছিলাম ক্রমাগত ... একদিন মেয়েকে নিয়ে বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে তিন তিনবার তিনজনকে চেনা ভেবে হাসি বিনিময় করার পর মেয়ে শুধরে দিলে ... বললে ... কাকে শুক্লা মাসি বলছ ??? ... আবার কাকে দেখে চিনতে পারছ ভাবছ ??? এ তো অচেনা !!!! 

এ দিকে ফোনে মন আর ল্যাপটপ ল্যাপে না হোক প্রায় প্রায় ল্যাপে নিয়ে ঘোরাঘুরি বিস্তর বেড়েছে !!! অগত্যা অগস্ত যাত্রার বদলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের দুয়ারে হাজির হলাম । তিনি পুরাতন প্রেসক্রিপসন দেখে আর এখনকার চোখের ছানবিন করে দেখলেন। বললেন ... 2017তে চোখের প্রেসার বাড়ার দরুণ যে আইড্রপ দিয়েছিলেন তার নিত্য ব্যবহারে উর্ধগামী চোখের প্রেসার এখন ঠিক জায়গায় ঘাটি গেড়েছে ( যদিও শারীরিক উচ্চরক্তচাপ উর্ধ্বগামী থাকে সময়ে সময়ে) । আমি বরাবর কথা মেনে চলার দলে ( বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই , সব নয়কো 🤫)

প্রেসার যদি ঠিকঠাক তাহলে এমন ধারার কারণ ??? আরো শুভদৃষ্টি যুক্ত পরীক্ষার পর চিকিৎসক জানালেন , চোখের পাওয়ার বৃদ্ধি প্রাপ্ত আর সাথে ল্যাপটপ জনিত কাজের বাড় বৃদ্ধি এর মূল কারণ !!! বুঝলাম বয়সের বৃদ্ধির হাতযশ আছে , কারণ বিগত 2016 তে ল্যাপটপ জনিত কাজ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হলেও চক্ষু তখন বয়সের গোলোযোগ ঘটার সীমান্ত অতিক্রম করে নাই।

তবুও 2017 সালের গ্লকোমা যে আর বাড়াবাড়ি করেনি ... তা ভেবে ভারি ফুর্তি হল। 

চিকিৎসক আরো সাবধানী হয়ে আই ফিল্ড টেস্ট করতে দিলেন। এ পরীক্ষা 2017তে হয়েছিল । 

পরীক্ষিত হতে গেলাম যথাস্থানে।  একচোখে ঠুলি পরিয়ে একখান মেশিনে মাথা ঢুকিয়ে ঠুলিহীন চোখে আলোর জ্বলে ওঠা ( এদিক ওদিক থেকে আসা আলোর বিন্দু) মেশিনের মাঝে ঠুলি বিহীন চক্ষু স্থির রেখে দেখে মেশিনের সাথে তার ( wire)  সহযোগে যুক্ত বটন প্রেস করে জানাতে হবে। এ ভাবেই এক এক চোখে পরীক্ষা হবে মিনিট ১০ করে মোট ২০ মিনিট।  বটন টেপার সাথে সাথেই শব্দ হবে । এক চোখে ঠুলি পরে এই সব টেপাটেপি করতে করতে মাঝে ঘুম হাজির !!! টেকনিশিয়ানের ডাকে জাগরিত হয়ে আবার আলোর উপস্থিতি গোনাগুনি শুরু করলাম । এক সময় মনে হচ্ছিল অনন্ত কাল যেন বসেই আছি আর গুনে ই চলেছি !!

এক সময় শেষ হল পরীক্ষার পালা। পরে জানলাম রিপোর্টে খানেক চিকিৎসকের কথার রিপিট টেলিকাস্ট হয়েছে। 

রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনি চশমার কাঁচে ব্লু ফিল্টার লাগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। সাথে দিলেন গুটি কতক চোখ সংক্রান্ত নিদান । চোখের শুকিয়ে যাওয়া কমার  ড্রপ বদল হল। চোখ  blink করে নাকি তার যোগ ব্যায়াম করা জরুরি , সাথে ফোন আর ল্যাপটপের ব্যবহার কমানোর নির্দেশ।  তা কতকটা সম্ভব কেউ কি জানো ???? 

নতুন রূপের চশমা হাজির ... বাকি নিদান ও বিধান মানার চেষ্টা চালিয়ে যেতে ই হবে !!! এই যা !!!!

একে তো চোখ দুখান ছোট্ট, তাতে গোলুমলু হয়ে তা দেখা যায় না !! হাসলেন তো বুজেই গেলেন !!! তাতে যদি দেখার সমস্যা যুক্ত হয় , তাহলে সে দুঃখ রাখব কোথায় ??? গল্পের বই পড়া ছাড়া তো বেঁচে বর্তে থাকা খুবই চাপের !!! চাপজনক বটে !!!